ফ্রন্ট-এন্ড ডেভেলপার গাইড - পর্ব ১ - কাজের পরিধি ও দায়িত্ব

[লেখালেখির অভ্যাস তেমন নেই বললেই চলে। যেটুকু আছে তা বাংলায় করা হয় না। তাই দৃষ্টিকটু ভুল থাকা খুবই স্বাভাবিক। ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো।]

একটা সময় ছিল যখন html এবং CSS খুব কঠিন কিছু ছিল না। কিছু রুল জানলেই যথেষ্ট ছিল। সাথে ছিল jQuery। ২০০৯ সালে node এবং ২০১০ সালে npm ও angularjs আসার পরে ক্লায়েন্ট সাইড ডেভেলাপমেন্টে সৃষ্টিশীলতার সুযোগ ও জটিলতা উভয়ই ক্রমবর্ধমান হারে বৃদ্ধি পেতে থাকে। Full stack developer এর প্রচলিত প্রথা ভেঙে আলাদা হতে থাকে ক্লায়েন্ট সাইড ও সার্ভার সাইড ডেভেলাপমেন্ট। তৈরি হয় দক্ষ frontend developer (FE Dev) এর চাহিদা এবং তা বাড়তেও থাকে। এই ধারা আজও অব্যাহত আছে।

২০১৭ সালের সূচনালঘ্নে এসে FE Dev এর কাজের পরিধিও অনেক বেড়ে গেছে। ডেভেলাপমেন্ট টিমে একজন FE Dev কে ডিজাইনার এবং backend ডেভেলাপার উভয়ের সাথে কাজ করতে হয়। তাই নিজের কাজের পাশাপাশি তাদের কাজ সম্পর্কেও মৌলিক ধারণা রাখতে হবে। আচ্ছা, ফ্রন্ট-এন্ড ডেভেলাপারের নিজের কাজগুলো কী কী?

PSD থেকে HTML ও Wireframe:

এটা প্রায় সবাই জানি। ফটোশপ ফাইল (psd), ইলাস্ট্রেটার ফাইল (ai) বা স্কেচ ফাইল (sketch) থেকে html ও CSS এ রূপ দেওয়া। যেটা অনেকেই জানি না সেটা হলো, FE Dev কে photoshop, illustrator ও sketch দিয়ে ডিজাইনে একটু-আধটু পরিবর্তন করার মতো বেসিক ধারণা থাকতে হবে। ডেভেলাপমেন্ট সাইকেলে যে কোনো সময়ে আইডিয়া বা কনসেপ্ট টিম মেম্বারদের সাথে আলোচনা করার জন্য দ্রুত wireframe তৈরি করা জানতে হবে।

ডিজাইনে সক্রিয় ভূমিকা:

সম্পূর্ণ ডিজাইন পাওয়ার পর অথবা ডিজাইন প্রসেস চলাকালীন সময়ে যদি এমন মনে হয় যে বতর্মান ডিজাইনে ফাইনাল প্রডাক্টে বিরূপ প্রভাব পড়বে তবে তা ডিজাইনার সহ অন্যান্য টিম মেম্বারদের সাথে আলোচনা করতে হবে এবং সমাধান প্রক্রিয়ায় সক্রিয় অংশগ্রহণ করতে হবে।

ক্লায়েন্ট সাইড লজিক:

JavaScript দিয়ে ক্লায়েন্ট সাইড লজিক লিখতে হবে। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানভেদে কাজের প্রকৃতি দুই ধরণের হতে পারে।

কিছু প্রতিষ্ঠান আছে যেখানে backend ডেভেলাপার api ডেভেলাপ করে। FE Dev ক্লায়েন্টে api integrate করে। তবে এক্ষেত্রে সাধারণত দুই জন ডেভেলাপার থাকেন। একজনের কাজ html ও CSS এ রূপ দেওয়া এবং অন্যজন শুধু জাভাস্ক্রিপ্ট নিয়ে কাজ করেন। তিনি শুধু ক্লায়েন্ট সাইড JavaScript ডেভেলাপার হতে পারেন অথবা full stack JavaScript Developer হতে পারেন।

অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে FE Dev html ও CSS এর সাথে কিছু জাভাস্ক্রিপ্ট লেখেন। বাকি কাজসহ backend অন্যজন করেন।

রেসপন্সিভ এবং ক্রস-ব্রাউজার কম্পেটিবল:

স্মার্টফোন, ট্যাবের আবির্ভাব ও এগুলোর ব্যাপক ব্যবহার FE Dev এর কদর বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ। একই কথা বলা যেতে পারে ক্রস-ব্রাউজার/প্লাটফর্ম কম্পেটিবেলিটির ক্ষেত্রেও। বিভিন্ন আকারের ডিভাইসে ডিজাইন দৃষ্টিনন্দন ও ফাংশনাল রাখতে হবে।

পার্ফমেন্স অপ্টিমাইজেশন:

পার্ফমেন্স অপ্টিমাইজেশন নিজেই একটা বিরাট ক্ষেত্র। অনেক বড় প্রতিষ্ঠানে বা প্রডাক্টে শুধু এই কাজের জন্যই একজন Performance Engineer থাকেন। পার্ফমেন্স ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্রন্ট-এন্ড ডেভেলাপমেন্টের একটি শাখা।

প্রতিষ্ঠানে যেই টাস্ক রানার অথবা মডিউল বান্ডলার ব্যবহার হয় তা সম্পর্কে সম্যক ধারণা রাখতে হবে। অপ্টিমাইজেশন করার জন্য ব্যাক-এন্ড সম্পর্কে মৌলিক ধারণা থাকতে হবে।

আপ-টু-ডেট থাকা:

Frontend development ফিল্ডে প্রতিদিনই বর্তমানের চেয়ে অধিকতর উন্নত নতুন কিছুর আগমন ঘটছে। FE Dev কে যতটুকু সম্ভব নিজেকে হালনাগাদ রাখতে হবে। নিউজলেটার, ব্লগ ফলো করতে হবে, পড়তে হবে, নতুন কনসেপ্ট মাথায় আসলে টেস্ট করতে হবে। এ কাজটি নিজ দায়িত্বে এবং নিজের ফ্রি সময়ে করতে হবে।

Frontend মানে শুধু psd to html বা শুধু JavaScript নয়। ফ্রন্ট-এন্ডের ব্যাপ্তি সুদূর প্রসারিত। কাজ করার অবারিত ক্ষেত্র। ফ্রন্ট-এন্ড মানে নিত্য-নতুন বাঁধা টপকানোর আনন্দ।

লেখাটি নিয়ে আপনার মতামত বা প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করুন। ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

সিরিজ: ফ্রন্ট-এন্ড ডেভেলপার গাইড

সর্বশেষ আপডেট: মে ১৪, ২০২০ খ্রিস্টাব্দ

লেখাটি সম্পাদনা করুন এখানে